★চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান:
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, সবার সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখেই আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা সেই নীতিটাই অনুসরণ করে চলেছেন অত্যন্ত সফলভাবে। সবার সঙ্গে সুসম্পর্ক দেখে বিএনপি’র গাত্রদাহ হচ্ছে। সেজন্য তারা উল্টাপাল্টা বলা শুরু করেছে।
তিনি বলেন, ‘ভারত থেকে আসার পর বিএনপি বলতে শুরু করেছে, আমরা নাকি দেশটা ভারতের কাছে বিক্রি করে দিয়েছি। এখন চীন থেকে আসার পর তারা বলে কি না, চীনের কাছেও দেশটা বিক্রি করে দিয়েছি। যেখানেই যাই তারা বলছে দেশটাকে বিক্রি করে দিচ্ছে। বিএনপির কাছে আমার আমার প্রশ্ন, দেশটাকে কয়বার বিক্রি করা যায়?’
শনিবার (৬ জুলাই) রাত ৮টায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে প্রীতি সাংবাদিক সম্মিলন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন। বিএফইউজে-বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন চট্টগ্রাম বিভাগ এ আয়োজন করে।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আমাদের পররাষ্ট্রনীতি হচ্ছে সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয় এবং আমরা অত্যন্ত সফলভাবে সেটি করে চলেছি। আমাদের প্রধানমন্ত্রী ভারত সফরে গিয়েছিলেন সেখান থেকে এসে কিছুদিনের বিরতিতে তিনি এখন চীন সফরে যাচ্ছেন। আমাদের সঙ্গে ভারতের সঙ্গে যেমন অত্যন্ত চমৎকার সম্পর্ক, চীনের সঙ্গেও আমাদের অত্যন্ত ভালো সম্পর্ক। আমাদের সঙ্গে রাশিয়ার যেমন অত্যন্ত চমৎকার সম্পর্ক একই সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও আমাদের অত্যন্ত চমৎকার ও ভালো সম্পর্ক।
তিনি বলেন, আমরা নিকট প্রতিবেশী ভারত যারা আমাদের মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে অবদান রেখেছে, তাদের সঙ্গে যেমন ভালো সম্পর্ক বজায় রাখছি, যারা স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় আমাদের পাশে ছিল না তারাও আমাদেরকে সহায়তা করছে আমাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখছে, আমাদের উন্নয়নে অবদান রাখছে। এটি আমাদের পররাষ্ট্রনীতির এই সফলতা। এটি বিএনপিসহ অনেকেই বুঝেও না বোঝার ভান করে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান বলেন, আমাদের নিকট প্রতিবেশী ভারতবর্ষ, যারা আমাদের মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে অবদান রেখেছেন তাদের সঙ্গে যেমন ভালো সম্পর্ক বজায় রাখছি, যারা স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় আমাদের পাশে ছিল না, তারাও আমাদেরকে সহায়তা করছে, আমাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখছে, আমাদের উন্নয়নে অবদান রাখছে, এটি আমাদের পররাষ্ট্রনীতিরই সফলতা। এটি বিএনপিসহ অনেকেই বুঝেও না বোঝার ভান করে।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা ও তার সরকার মাথা উঁচু করে চলে। শেখ হাসিনা কারও কাছে মাথা নোয়াবার নয়, এটি মনে রাখতে হবে। খেপাটে মেজাজের রিজভী সাহেব কী বলল, ঢুলঢুলে মেজাজে গয়েশ্বর বাবু কী বলল, শিক্ষিত হয়েও মীর্জা ফখরুল সাহেব অশিক্ষিতের মতো কথা বলল তাতে কিছু যায় আসে না। আমরা রাষ্ট্রের মর্যাদা রক্ষা করে, সবার সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই, প্রধানমন্ত্রী সেটিই করে চলেছেন।
‘গণমাধ্যমে রাষ্ট্রের উন্নতি প্রতিফলিত হওয়া উচিত’
গত পাঁচ বছর তথ্য ও সম্প্রদায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী এবং দীর্ঘ ৭ বছর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদকের দায়িত্বে থাকার কারণে সাংবাদিকদের সঙ্গে আত্মিক সম্পর্ক তৈরি হয়েছে বলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
গণমাধ্যম রাষ্ট্র এবং সমাজ পরিচালনা করার ক্ষেত্রে, সমাজকে সঠিকখাতে প্রবাহিত করার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সাংবাদিকরা সমাজের তৃতীয় নয়ন উন্মোচিত করে। দায়িত্বশীলরা যেখানে দৃষ্টি নিবদ্ধ করে না, তাদের দৃষ্টি সেখানে আবদ্ধ করে। সমাজের দর্পণ হিসেবে গণমাধ্যমকে পরিচালনা করে সাংবাদিকরা। সুতরাং তারা যদি সঠিকভাবে চলতে না পারে তাহলে গণমাধ্যমও সঠিকভাবে চলতে পারে না।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি, প্রতিটি মানুষের জীবন মানের উন্নতি, সেটি সংবাদ মাধ্যমে প্রতিফলিত হওয়া প্রয়োজন। সেটি অনেক সময় সঠিকভাবে প্রতিফলিত হয় না। সমাজের অসংগতি কিংবা দায়িত্বশীলদের ব্যর্থতা যতটুকু প্রতিফলিত হয়, সমাজের উন্নতি, রাষ্ট্রের উন্নতি কিংবা দায়িত্বশীলদের সফলতা সেটি অনেক সময় ততটুকু প্রতিফলিত হয় না, সেটি হওয়া প্রয়োজন রয়েছে।
বিএফইউজে সভাপতি ওমর ফারুকের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম মহাসচিব মহসীন কাজীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, বিএফইউজে’র সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল, বিএফইউজে’র মহাসচিব দীপ আজাদ। আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরী, বিএফইউজে’র সাবেক সহসভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী প্রমুখ।
রাঙ্গুনিয়ায় সমন্বয় সভা, ‘ক্লাইমেট স্মার্ট কৃষিমেলা’ ও বৃক্ষরোপণ উদ্বোধনে হাছান মাহমুদ
এর আগে সকালে হাছান মাহমুদ নিজ নির্বাচনী এলাকা চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার প্রশাসনিক ও আইন-শৃঙ্খলা সমন্বয় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন এবং উপজেলায় ‘ক্লাইমেট স্মার্ট কৃষি প্রযুক্তি মেলা’ এবং বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি উদ্বোধন করেন।
এ সময় তিনি সমবায় অফিসের মাধ্যমে পশ্চিম খুরুশিয়া আশ্রয়ণ প্রকল্প সমবায় সমিতির সদস্যদের লভ্যাংশের অংশসহ তিন লক্ষাধিক টাকা ঋণ প্রদান ও সমাজসেবা অফিসের মাধ্যমে ক্যান্সার, কিডনিসহ জটিল রোগে আক্রান্তদের মাঝে ৫০ হাজার টাকা করে ৪৭টি চেকে ২৩ লাখ ৫০ হাজার টাকার অনুদানের চেক বিতরণ করেন।
এরপরই উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ দপ্তর আয়োজিত তিন দিনব্যাপী ‘ক্লাইমেট স্মার্ট কৃষি প্রযুক্তি মেলা’ ও বন বিভাগ আয়োজিত সড়কের পাশে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি উদ্বোধন করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
Leave a Reply